খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন

খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। চিয়া সিড ভেজানো পানি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। চিয়া সিড ভেজানো পানি পান করার ফলে স্বাস্থ্যের অনেক উপকার সাধন হয়।

পুষ্টিকর একটি খাবার হলো চিয়া সিড। চিয়া সিটে রয়েছে প্রচুর ওমেগা -৩ ফ্যাটি এসিড,  ক্যাফিক এসিড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য আশ। চলুন জেনে নেই খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। 

পেজ সূচিপত্রঃ খালি পেটে চিয়া সিড  খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে চিয়া সিট খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা অনেক। খালি পেটে চিয়া সিট খাওয়ার ফলে শরীরের উপকার হয়। চিয়া সিড খাওয়ার ফলে শরীরের বাড়তি ওজন কমে যায়। এছাড়া চিয়া সিডে থাকা দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়ে বেশি সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি এবং পালং শাকের চেয়ে তিনগুণ বেশি আয়রন ও অন্যান্য উপাদান যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। 

আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরুভূমিতে চিয়া গাছ জন্মায়। পুদিনা গাছ থেকে  মূলত চিয়া সিড পাওয়া যায়।এটি দেখতে সাদা, কালো এবং বাদামি রঙের। এটির আকার খুব ছোট বলতে গেলে অনেকটা তিলের মত। চিয়া সিডগুলো পানিতে ভেজালে ফুলে গিয়ে 12 গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়। এটিকে অনেকে ঔষধি গাছ হিসেবে বিশ্বাস করে।

এটি শুধু ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত নয় এটি রূপচর্চার কাজেও খুব ব্যবহৃত হয়। অনেক আদিবাসীরা রয়েছে যারা সাধারণ অসুখ হলে কোন ওষুধ খাওয়ার পরিবর্তে চিয়া সিড খায়। সুপার ফুড হিসেবে চিয়া সিড খুবই পরিচিত। কেন না চিয়া সিটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, ক্যাফিক অ্যাসিড, আয়রন ও খাদ্য আঁশ। 

  • সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খেলে দ্রুত ওজন কমে।
  • চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যা কোলন ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমায়।
  • খাওয়ার ফলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায় যার কারণে এসিডিটির সমস্যা দূর হয়।
  • চিয়া সিট খাবার ফলে শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

চিয়া সিট খাবার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানব। আমরা বর্তমান সময়ে খাবার নিয়ে খুব সচেতনতা অবলম্বন করি। আবার অনেকেই সচেতন থাকে প্রতিদিনের খাবারে কি পুষ্টিগুণ আছে তা নিয়ে। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের খাদ্য তালিকায় এখন খুব জনপ্রিয় খাবার হচ্ছে চিয়া সিড। এটি আমেরিকাতে পাওয়া যায়। এটি বিশেষ ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ।

 বিশেষজ্ঞরা বলে থাকে এটি দেখতে অনেকটা তিলের দানার মত দেখতে। পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে চিয়া সিড অন্যতম একটি খাবার। এতে বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে যেমন পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং  খাদ্য আঁশ। চলুন জেনে নেই চিয়া সেট খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
  • চিয়া সিড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে তোলে।
  • চিয়া সিট খাবার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
  • চিয়া সিড হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং এবং হাড়কে মজবুত করে তোলে।
  • চিয়া সিট খাওয়ার ফলে ব্লাড সুগার এর ঝুঁকি কমে।
  • চিয়া সিড শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।
  • চিয়া সিট খাওয়ার ফলে ভালো ঘুম হয়।
  • এছাড়া চিয়া সিড খেলে চুল ও নখ সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।
  • চিয়া সিড মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। যা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা খুবই উন্নত করে।
যে কোন খাবারে উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা রয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে চিয়া সিডের  অপকারিতা রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নিই চিয়া সিট খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে।
  • এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে স্তন ক্যান্সার বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই এটি সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
  • বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে পেটে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে তাই অল্প পরিমাণে খাওয়া উচিত।
  • আবার চিয়া সিড অতিরিক্ত খেলে অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমে যেতে পারে।
  • চিয়া সিড বেশি খাওয়ার ফলে রক্তচাপ বেশি পরিমাণে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • কিছু লোকের এলার্জি সমস্যা রয়েছে এদের ক্ষেত্রে চিয়া সিড খেলে এলার্জির লক্ষণগুলো ফুটে উঠতে পারে। তাই এটি এড়িয়ে চলা উচিত।
  • গর্ভবতী মহিলাদের চিয়া সিড খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 

গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় চেয়ে সেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন। গর্ভাবস্থায় চ্চিয়া ছিটকি খাওয়া যায় এটি অনেকেরই প্রশ্ন থাকে হ্যাঁ এটি গর্ভাবস্থায় খাওয়া যায়। তবে এটি কিভাবে খেতে হয় গর্ভাবস্থায় এটা হয়তো অনেকেই জানে না। চিয়া সিট খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। গর্ভাবস্থায় অনেকের হজমের সমস্যা হতে পারে সে ক্ষেত্রে চিয়া সিড খেতে পারেন। 

গর্ভাবস্থায় অনেক নারী রয়েছে যাদের কষ্ট কাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয় তখন চিয়া সিড খেতে পারে। সেজন্য আপনাকে চিয়া সিড ভিজিয়ে রেখে খেতে হবে তাহলে নানা ধরনের কষ্ট কাঠিন্য এবং পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।চিয়া সিড ভেজানো পানি খাওয়ার ফলে শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ হবে গর্ভবতী মহিলার।

চিয়া সিড এর পুষ্টিগুণ

চিয়া সিড এর পুষ্টিগুণ রয়েছে অনেক। চিয়া সিড অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। চিয়া সিড পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিন। চিয়া সিডে রয়েছে দুধের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়ে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি, পালং শাকের চেয়ে তিনগুণ বেশি পরিমাণ আয়রন, কলার চেয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ পটাশিয়াম, মুরগির ডিম থেকে তিনগুণ বেশি প্রোটিন এবং এতে রয়েছে স্যামন মাছের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ওমেগা-৩। আপনি আপনার খাদ্য তালিকা তিন থেকে চার দিন।

চিয়া সিড খাওয়ার সময়

চিয়া সেট খাওয়ার সঠিক সময় হল সকালে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমানোর আগে। দুই চামচ চিয়া সিড এক গ্লাস পানিতে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে দিয়ে তার সাথে দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে দারুন উপকার হয়। চিয়া সিডের নিজস্ব কোন স্বাদ নেই। এটি বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশে খাওয়া হয়। যেমন ধরুন সালাদে র সাথে উপরে ছিটিয়ে দিয়ে এটি পরিবেশন করে খাওয়া হয়। এটি টক দই অথবা শরবত ও অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া হয়। 

চিয়া সিড খেলে কি ওজন বাড়ে

চিয়া সেট খেলে কি ওজন বাড়ে এটি অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে। হ্যাঁ, চিয়া সিড খেলে অবশ্যই ওজন বাড়ে। চিয়া সিডে রয়েছে ক্যালোরি, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার ও স্বাস্থ্যকর চর্বিসহ নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান। এগুলো বেশি পরিমাণে খেলে আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধির জন্য খুবই উপকারী। চিয়া সিড খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর ভালো থাকে। চিয়া সিড পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমাতে চিয়া সিড খুবই উপকারী একটি উপাদান। ওজন কমানোর জন্য আমরা নিয়ম মেনে চলি। তো আপনার ওজন কমানোর জন্য চিয়া সিড দারুন একটি সমাধান। ওজন কমাতেচিয়া সিড কিছু নিয়ম রয়েছে। চিয়া সেট খাবার ৩০ মিনিট আগে তা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তিরিশ মিনিট হয়ে গেলে তাতে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে হবে। 

তাহলে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে চিয়া সিড দারুন কাজ করবে। চিয়া সিড খেলে মেদ কমে। কেননা চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা হজমের সমস্যা দূর করে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। আর চিয়া সিডের সাথে লেবু মেশানো হলে সেই মিশ্রণটি পান করার ফলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি দূর করে মেটাবোলিক সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যা শরীরের ওজন কমানোর জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান।

চিয়া সিড খেলে কি কষ্ট কাঠিন্য হয়

চিয়া সিট খেলে কি কষ্ট কাঠিন্য হয় এটি অনেকেরই প্রশ্ন। না, চিয়া সিড খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কষ্টকাঠিন্য হলে যে ওষুধ খেলে এ রোগ নিরাময় হয় তা নয়। ওষুধ ছাড়া কষ্ট কাঠিন্য দূর হয়। যদি ঘরোয়া উপায়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে চান তাহলে আপনাদের খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন নিয়ে আসুন।


বর্তমানে চিয়া সিড কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার খুব জনপ্রিয় একটি খাবার। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে তিন বেলা খালি পেটে চিয়া সিড খান তাহলে উপকার মিলবে। টিয়া সিডে থাকা ভিটামিন সি শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। আর এটি হজম স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং কষ্টকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।

চিয়া সিড দিয়ে রূপচর্চা

চিয়া সিড দিয়ে রূপচর্চা করার ফলে ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে। এমনকি চিয়া বীজ দিয়ে ত্বকের রূপচর্চা করলে বয়সের ছাপ পড়াও বন্ধ হয়ে যায়। ত্বক স্বাস্থ্যজ্জ্বল করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই উপাদানটি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এক সপ্তাহের ভেতরে ত্বক উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর করে তুলতে পারে চিয়া সিড। 

ত্বককে উজ্জ্বল করতে যেভাবে চিয়া সিড মুখের ত্বকে ব্যবহার করবেন তা জেনে নিন। আপনি তৈরি করে মুখে মারতে পারেন। এটির জন্য প্রথমে আপনাকে চিয়া সিডের বীজ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। যখন এটি জেলের মত হতে শুরু করবে তখন এতে অলিভ অয়েল তেল এবং মধু ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। 

তারপর এই মিশ্রণটি মুখে প্রাই 20 মিনিট লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট হয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আর এটির নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনি এর ফল দেখতে পাবেন। আর এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের দাগ দূর হবে এবং ত্বক আগের থেকে অনেক উজ্জ্বল দেখাবে। 

আবার যাদের মুখে ব্রণের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এটি খুবই উপকারী একটি উপাদান। এর জন্য প্রথমে চিয়া সিড, ওটস এবং অ্যালোভেরা জেল একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর মুখ ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়ে। মুখে ভালো করে ম্যাসাজ করতে হবে। তারপর দেখবেন আপনার ত্বকের ব্রণ এবং ব্রণের মতো একাধিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে।

পরিশেষে

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে চিয়া সিড খালি পেটে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি। চিয়া সিড অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। এটি রূপচর্চার কাজেও বেশ উপকারী একটি উপাদান। চিয়া সিড খাওয়ার ফলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি মিলছে। তাই আপনারা আপনাদের দৈনন্দিন জীবনের খাদ্য তালিকায় এটি রাখতে পারেন।

বন্ধুরা আজকের আর্টিকেল পরে যদি আপনারা উপকৃত হন বা আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের বন্ধুদের এবং আপনাদের পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন। আর বিভিন্ন ধরনের লাইফ স্টাইল বিষয়ক তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url