খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা - তুলসী পাতা ব্যবহারের নিয়ম
খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা এবং তুলসী পাতা ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন। তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে সকলেই জানে। তুলসী পাতার ব্যবহার ওষুধ হিসেবে অনেক পুরনো।
তুলসী পাতায় রয়েছে উপকারী কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। খালি পেটের তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যের খুবই উপকার হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়।
পোস্ট সূচিপত্রঃ তুলসী পাতার উপকারিতা
খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। তুলসী পাতা খেলে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। তুলসীপাতা আমাদের পাকস্থলীর জন্য খুবই উপকারী উপাদান। বিভিন্ন রোগের সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক খালি পেটে তুলসী পাতা খেলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে তুলসীর ভূমিকা অনেক। তুলসিতে রয়েছে কর্মইনেটিভ বৈশিষ্ট্য যা এসিডিটি, পেট থাপার সমস্যা কমে থাকে। সেজন্য সকালে খালি পেটে তুলসী পাতার রস খেলে শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন দূর হয়। এর ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুনঃ খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে তুলসীর ব্যবহার অনেক। সুস্থ থাকলে হবে না তার সাথে যেকোনো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রয়োজন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এজন্য আপনাকে সাহায্য করবে তুলসী পাতা। তুলসী পাতাতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার ও প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
মুখের দুর্গন্ধ নিয়ন্ত্রণে
মুখের দুর্গন্ধ নিয়ন্ত্রণে তুলসী পাতা ব্যবহার রয়েছে। তুলসী পাতাতে রয়েছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য। যা মুখের ভেতরে নানা ধরনের সংক্রমণ হতে রক্ষা করে। তুলসীর পানি দিয়ে গড়গড়া করলে মাড়ি সুস্থ থাকে। ফলে দুর্গন্ধের সমস্যা হয় না।
দুশ্চিন্তা কমাতে
চিন্তা কমাতে তুলসীর কাজ রয়েছে। তুলসির পানি খেলে মন শান্ত থাকে এবং চিন্তা দূর হয়। এছাড়া তুলসীর পানি হজম শক্তি ভালো রাখে কষ্টকাঠিন্য এবং এসিডিটি দূর করে থাকে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে
ক্যান্সার প্রতিরোধে তুলসী পাতার ভূমিকা। তুলসী পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিক্যাল এর প্রভাব কমায়। এর ফলে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগের ঝুঁকি কমে।
ঠান্ডা জনিত সমস্যা প্রতিরোধে
ঠাণ্ডা জনিত সমস্যা প্রতিরোধে তুলসী পাতার উপকারিতা অনেক। পানি খেয়ে থাকেন তাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা থেকে রেহাই মেলে। যাদের কাশির সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কাশির ঝুঁকি কমে যায়।
তুলসী পাতা ব্যবহারের নিয়ম
তুলসী পাতা অনেকভাবেই ব্যবহার করা যায়। তুলসী পাতা চা বানিয়ে খাওয়া যায়। আবার তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া যায়। আবার তুলসী পাতার রসে মধু মিশিয়ে খাওয়া যায়। তুলসী পাতা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। তুলসী পাতা আমাদের জন্য খুবই উপকার উপাদান।
তুলসী পাতা চা বানিয়ে খেতে পারেন। গরম গরম তুলসি চা খেতে পারেন। সেজন্য আপনাকে ফুটন্ত পানিতে তুলসী পাতা ছেড়ে দিতে হবে। এরপর পানি ফুটানো হলে সেটা নামিয়ে মধু ও লেবু মিশিয়ে পান করতে পারেন। আবার কয়েকটি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলেও অনেক উপকার পাবেন।
আবার ছোটদের ঠান্ডা লাগলে তুলসী রসে মধু মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। তুলসী পাতার রসে মধু ও আদার রস মিশিয়ে পান করতে পারেন। আবার একা পানিতে কয়টি তুলসী পাতা ও এক টুকরো আদা দিয়ে পানি ফুটিয়ে নিন। ফুটে উঠলে জাল কমিয়ে দিন। এরপর পানি কমে অর্ধেক হয়ে গেলে নামিয়ে পানি পান করুন। তাহলে গলা খুসখুস ভাব দূর হবে।
মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা
মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে এ পর্যায়ে আলোচনা করব। তুলসী একটি আয়ুর্বেদী ঔষধ। এর নানা ধরনের গুণাগুণ রয়েছে। মধুর ব্যবহার অনেক পুরনো ঠান্ডা লাগার কাজের ক্ষেত্রে। আমাদের সকলেরই তুলসী পাতা এবং মধু খেয়ে দিন শুরু করা উচিত। গরম পানিতে তুলসী পাতা দিন। এবার এতে মধু মিশিয়ে খান। এই মিশ্রণ খেলে ঠান্ডা লাগার সমস্যা, কাশির সমস্যা, ও গলা ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।
মধু ও তুলসী পাতা খেলে অনেক উপকার লাভ করা যায়। যেমন-
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- ঠান্ডা লাগার সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
- এলার্জির সমস্যা দূর করে।
- তুলসীও মধু কোলেস্টেরলের মাত্রা কে কমায় ফলে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায় এর ফলে হৃদপিণ্ডকে ভালো থাকে।
- এই তুলসী ও মধু খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে রক্ষা মেলে।
- কাশির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তুলসী ও মধু।
- ক্যান্সার প্রতিরোধে তুলসী পাতার উপকারিতা রয়েছে
- ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও তুলসী পাতা উপকারিতা রয়েছে। কেননা তুলসী পাতা খেলে তা রক্তে সুগারের মাত্রা ও কোলেস্টেরল দুটোই রোধ করে। তাই খুব সহজে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
- ডায়াবেটিস দূরে রাখতে সাহায্য করে। তুলসী পাতা ইনসুলিন উৎপাদনে কাজ করে। প্রতিদিন তুলসী পাতা খেলে রক্তের সুগারের মাত্রা কমে যায় ফলে তুলসী আন্টি ডায়াবেটিক ওষুধের কাজ করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- চুলের ক্ষেত্রেও তুলসির উপকারিতা রয়েছে।
তুলসী পাতার চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন সকালে কাঁচা তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে এর দারুন উপকার পাওয়া যাবে। তুলসী পাতা ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। তুলসী সর্দি কাশির মত সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা দূর করতে খুবই কার্যকারী।তুলসী গাছ আমাদের অনেকের বাড়িতে থাকে। আর বাড়িতে থাকা এ তুলসী পাতার রস চিবিয়ে খান তাহলে দূর হবে টিউমার ও ক্যান্সারের মতো জটিল সমস্যা।
আরো পড়ুনঃ করলার জুস বানানোর নিয়ম
তুলসী পাতার জুড়ি মেলা ভার। প্রতিদিন নিয়ম করে দুটো তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে খুব সহজে ইনফেকশন এর সমস্যা দূর হবে। তাছাড়া তুলসী পাতা বিশেষ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আবার তুলসী পাতা দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। তুলসী পাতা এবং এলাচ গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি পান করলে খুব সহজে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি মিলে।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করতে তুলসী পাতা বিশেষ উপকারী । অগ্নাশয়ে যে টিউমার কোষ দেখা দেয় তা দূর করতে তুলসী পাতা দারুন উপকারি একটি উপাদান। এর তুলসী পাতা এগুলোর পাশাপাশি দূর করে বেস্ট ক্যান্সার। আবার যাদের যেকোনো চাপ হোক বা পড়াশোনার চাপ তা থেকে খুব সহজে মুক্তি পেতে তুলসী পাতা সাহায্য করে। নিয়ম করে তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে মানসিক চাপ থেকে অনেকটাই উপকার লাভ করা যায়।
কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার সম্পর্কে জানা যাক। কাশি হলে যেকোনো ওষুধের চেয়ে তুলসী পাতা ও মধু হলো সব থেকে ভালো। কাশিতে তুলসী পাতা উপকার দেয়। কাশি নিরাময়ের ক্ষেত্রে তুলসী পাতা ব্যবহারে অন্যতম কারণ হলো, কাশি হলে আমাদের শরীরে প্রদাহ বেশি থাকে। যে কারণে এ সময় খাবার সহজে হজম হতে চায় না। তুলসী পাতা কিন্তু সহজে হজম সমস্যা দূর করে থাকে।
এটি খুব হালকা একটু উপাদান। তুলসী পাতা শুকনো এবং গরম প্রকৃতির যে কারণে গলার কাছে ও ফুসফুসে আরাম দিতে পারে। তুলসী পাতা খেলে ক্ষুধা না লাগার সমস্যাও দূর হয়। মুখে রুচি বাড়াতে সাহায্য করে তুলসী পাতা। আবার খাবার হজমেও সাহায্য করে এ পাতা।
তুলসী পাতার রস শ্বাসযন্ত্রের যেকোনো সমস্যা মেটাতে ম্যাজিকের মতো কাজ কর। এই পাতার এন্ট্রিমাইক্রোবায়াল যৌগ শুকনো কাশি কমাতে সাহায্য করে। মধুর সঙ্গে কয়েকটি তুলসী পাতা এমনি চিবিয়ে খেতে পারেন তা না হলে তুলসী পাতার রস বের করে তার মধ্যে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে উপকার পেতে পারেন।
শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঋতু পরিবর্তনে সর্দি, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, ঠান্ডা জনিত সমস্যায় দারুন কাজ করে এই তুলসী। রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া তুলসী পাতা অনেক সমস্যা দূর করতে সক্ষম। বিশেষ করে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করতে পারে। সাইনোসাইটিস ও মাথা ব্যথা নিমিষে দূর করতে পারে এই তুলসী পাতা। তাই শীতের সময়ে নিয়মিত করে শিশুকে খাওয়াতে পারেন তুলসী পাতা। তো কিভাবে শিশুকে তুলসী পাতা খাওয়াবেন সে সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
- তুলসী পাতার সাথে এক টুকরো আদা বেটে নিন। দিনে দুইবার এ পেস্ট খাওয়ান। তুলসী পাতার এই পেস্টের সাথে মিশিয়ে নিতে পারেন মধু।
- আবার তুলসী পাতায় গুড় মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন শিশুকে।
- একটি পাত্রে পানি গরম করে তাতে আদা কুচি, তুলসীপাতা ও দারুচিনি গুড়া দিন। এই বিশেষ পানীয় খাওয়াতে পারেন শিশুকে।
- বাচ্চাদের শীতের সময় বুকে কফ জমে থাকে তখন এক গ্লাস গরম পানিতে তুলসী পাতা, আদা ও চা পাতা ভালো করে ফুটিয়ে তাতে মধু এবং লেবু মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন এতে করে শিশুর বুকের জমে থাকা কফ বের হয়ে যায়।
তুলসী পাতার রস খাওয়ার নিয়ম
তুলসী পাতার রস খাওয়ার ফলে বিভিন্ন রোগের সমস্যা সমাধান মেলে। তুলসী পাতার রস খাওয়ার ফলে পুরনো কাশি বা শুকনো কাশি ভালো হয়ে যেতে পারে। তুলসী পাতা রস যন্ত্রের যেকোনো সমস্যা মেটাতে সাহায্য করে। জ্বর ও ব্যথা উপশমে তুলসী রসে সঙ্গে গোলমরিচ খেলে জ্বর নিয়ন্ত্রণে থাকে। তুলসী পাতার রস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা জাক।
একটি বা দুটি তুলসী পাতা, 2 টেবিল চামচ মধু, আধা চিমটি হলুদের গুঁড়া, আধা চিমটি লং পেপার, আধা চিমটি কালো গোলমরিচ, সবকিছু একসঙ্গে মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এবার সেখান থেকে রস বের করে নিন। ৫ মিলি করে দিনে ২ থেকে ৩ বার এটি খেতে পারবেন। যেহেতু এ উপাদানটি খুব গরম প্রকৃতির তাই দুই সপ্তাহ খাওয়ার পর এটা বন্ধ করে দেয়া উচিত।
তুলসী পাতা মুখে দিলে কি হয়
তুলসী পাতা যেমন স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী তেমনি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। তুলসী পাতা নানা ধরনের উপকারিতা রয়েছে। তুলসী পাতা আপনি রুপবানেও ব্যবহার করতে পারেন আর এতে আপনি খুবই উপকার পাবেন। অনেক উপকারী এর প্রমাণ একাধিক গবেষণাতে পাওয়া গেছে। এজন্য আপনি ত্বকের যত্নে ব্যবহার করুন। তাহলে ম্যাজিকের মত উপকার পাবেন।
আরো পড়ুনঃ তিতা করলার উপকারিতা
ভিটামিন সি, ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ও এসেন্সিয়াল অয়েলগুলো যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে ত্বকে বার্ধক্য বা বয়সের ছাপ পড়ে না। আর তুলসী পাতা বেটে ত্বকে লাগালে ত্বক কোমল ও মসৃণ হয়। বিশেষ করে তুলসী পাতা ব্রনের সমস্যা দূর করে। তাই রূপচর্চার কাজে তুলসী রাখা জরুরি।
তুলসী পাতার মধ্যে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তুলসী পাতা ব্রণ, ব্রনের দাগ, লালচে ভাব, ব্রণের ব্যথা ইত্যাদি কমাতে খুবই কার্যকরী। তুলসী পাতা ও নিমপাতা একসাথে বেটে নিন এবার এতে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে। এরপর তোকে যে স্থানে ব্রণ রয়েছে। সে স্থানে এই প্যাকটি লাগিয়ে নিন। এতে করে ব্রণের সমস্যা দূর হবে।
আবার যাদের মুখে ছোপ ছোপ দাগ পড়ে গেছে তাদের ক্ষেত্রে তুলসী পাতা খুবই উপকারী একটি উপাদান। তুলসী পাতা বেটে নিয়ে তার সাথে একটা ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে মিশিয়ে নিন তারপর পুরো মুখে লাগিয়ে রাখুন 20 মিনিট। এরপরে ঘষে তুলে ফেলুন। এর ফলে ছোপ ছোপ দাগ দূর হবে।
তুলসী পাতা চুলে দিলে কি হয়
চুলের যত্নে তুলসী পাতার গুরুত্ব অনেক। চুলের যত্নে তুলসী রয়েছে নানা রকম ব্যবহার। চুলের তেল দেওয়ার আগে তেলে তুলসির রশ মিশিয়ে নিন। চুলে লাগিয়ে রাখলে চুলের খুশকি,খুশকির কারণে হওয়া চুলকানি, চুল পড়া সমস্যা থেকে মুক্তি মিলে। এজন্য শুকনো তুলসী পাতা এবং শুকনো আমলকির গুড়া সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে সেই পানি চুলে দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে করে চুলের সমস্যা দূর হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক তুলসী পাতার চুলে দিলে কি কি উপকার হয়।
- টক দই এর সাথে মেশান তুলসী পাতার রস মিশ্রণটি চলে এর গোড়ায় লাগালে দ্রুত খুশকি দূর হবে।
- মেহেদির গুড়া ও তুলসী পাতার গুড়া মিশিয়ে নিন এবং চায়ের লেকার দিয়ে মিশ্রণটি ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। পরের দিন চুলে লাগিয়ে বিশ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে চুল কালো ঝলমলে হবে।
- নারিকেল তেলের সাথে তুলসী পাতা মিশিয়ে নিন ঠান্ডা হলে এ তেল লাগান চুলে। সারারাত রেখে দিন পরের দিন সকালে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন এটি চুল পড়া কমানোর পাশাপাশি অকালে চুল পাকা রোধ করবে।
- তুলসী পাতা সামান্য পানি নিয়ে বেটে নিন দিয়ে চুলে লাগিয়ে নিন শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আর এটা সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন তাহলে ফল পাবেন দ্রুত।।
- তুলসী পাতা, নিম পাতা, ও জবা ফুল একসঙ্গে বেটে চুলের গোড়ায় লাগান।
- তুলসীর তেল মাথায় লাগালে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।
- খুশকি ও চুলকানি দূর করে এই তুলসী।
- প্রাকৃতিকভাবে মাথার ত্বক পরিষ্কার করতে পারে তুলসী।
- তুলসী চুল পড়া বন্ধ করতে এবং বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- চুলের রুক্ষতা দূর করতে কার্যকরী এই তুলসী।
- অকালে চুল পাকা রোধ করে তুলসী পাতা।
আমরা সকলে চুল পড়ার সমস্যায় ভুগে থাকি। এজন্য তুলসী পাতার তেল ব্যবহার করলে আমাদের চুল হবে ঝলমলে উজ্জ্বল।
তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক
তুলসী পাতার যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি অপকারিতা ও রয়েছে। তুলসী পাতা উপকারী কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহারে এটিও হয়ে উঠতে পারে মারাত্মক ক্ষতিকর। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ করলার জুসের উপকারিতা ও অপকারিতা
- অধিক পরিমাণে তুলসী পাতা খেলে রক্ত জমাট বাধা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। হলে কোন অপারেশন বা কোথাও কেটে গেলে অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে যা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
- অতিরিক্ত তুলসী পাতা খেলে নারীদের বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় এই তুলসী পাতা অতিরিক্ত খেলে গর্ভপাত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
- তুলসী পাতা বেশি পরিমাণে পটাশিয়ামযুক্ত তাই এটি অতিরিক্ত খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমে এবং একসময় রক্তচাপ একদম কমে যেতে পারে যা আবার ক্ষতির কারণ।
- কেউ যদি অতিরিক্ত তুলসী পাতা খায় তাহলে তার শরীরে অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে এবং মুখ জ্বালাপোড়া করা সহ বমি বমি ভাব এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।
- তুলসী পাতায় পারদ এবং আয়রন থাকে যা আমাদের দাঁতের পক্ষে ভালো নয়। পাতা জীবনের সময় পারদ আমাদের মুখে চলে যায় যা আপনার দাঁতকে ক্ষতি করতে পারে।
- আবার তুলসী পাতায় কিছু পরিমাণ আর্সেনিক পাওয়া যায় যা দাঁত নষ্ট করতে পারে। তুলসী পাতা প্রাকৃতিকভাবে সামান্য এসিডযুক্ত যা ফলে দাঁতে ব্যথা করতে পারে।
খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে অনেক রোগ দূর হয়। তুলসির অনেক গুনাগুন রয়েছে। ঠিক তেমনি এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই সঠিক পদ্ধতি মেনে তুলসী পাতা না খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই সকল নিয়ম মেনে তুলসী পাতা খাওয়া উচিত।
শেষ মন্তব্য
আজকের এই আর্টিকেলে খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা এবং তুলসী পাতা ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে তুলসী পাতার উপকারিতা ও এর ক্ষতিকর দিক সমূহ এবং এটি আমাদের ত্বকের ক্ষেত্রে খুবই উপকারী একটি উপাদান এ বিষয়ে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
প্রিয় পাঠক আজকের এ আর্টিকেল পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে আপনারা আপনাদের বন্ধুদের সাথে বা আপনাদের পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন। আর এই ধরনের তথ্য পেতে এবং লাইফ স্টাইল বিষয়ক আর্টিকেল আরো পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url