আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ব্যবহারের নিয়ম
সূচিপত্র ঃ আমলকি সম্পর্কে
- আমলকির খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
- আমলকির বিভিন্ন উপকারিতা
- আমলকি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- আমলকি গুড়া খাওয়ার নিয়ম
- শুকনো আমলকি খাওয়ার নিয়ম
- রাতে আমলকি খেলে কি হয়
- নিয়মিত আমলকি খেলে যে উপকার হয়
- দুপুরে খাওয়ার পরে আমলকি খান
- বিভিন্ন রোগ সারাতে আমলকি
- আমলকির ঔষধি গুন
- নতুন চুল গজাতে আমলকি
- চুলের যত্নে আমলকি ও মেথি
- আমলকির পার্শপ্রতিক্রিয়া
আমলকির খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আমলকি অনেক রোগের জন্য চিকিৎসা প্রদান করে থাকে। চিকিৎসা প্রদান করে থাকে বলে একে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত করা হয়। আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। আমলকিতে ক্যালসিয়ামফস, ফরাস, ক্যারোটিন এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর মত অনেক খনিজ ও ভিটামিন রয়েছে।আমলকি চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে এবং চুলের পরিচর্যার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এটি চুলের গোরা মজবুত করা নয় বরং এটি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।আমলকি চুলের বিভিন্ন প্রকারের কাজ করে থাকে।আমলকি কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের সমস্যা দূর করে থাকে জন্য পড়ানোর জন্য এছাড়া বদহজম সাধ্য কাজ করে। এসিডিটির সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে । আমলকি আমলকি চোখ ভালো রাখার জন্য কাজ করে।
সবার জন্য আমলকি মোটেও ভালো নয়। আমলকি ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ থেকে শরীরের মেটাবলিজম বাড়ানো ইত্যাদিতে সাহায্য করে। আমলকির এত গুন সত্বেও কিন্তু এটি এমন একটি ফল যার মধ্যে থাকা উপাদানে কিছু কিছু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেমন যাদের গ্যাসের সমস্যা বা যাদের হজমের সমস্যা আছে এবং যাদের পেতে সহজে এসিডিটি তৈরি হয়।
এরকম ব্যক্তিদের আমলকি থেকে দূরে থাকা উচিত। আমলকি টক ভাব এতটাই প্রবল যে একটি পেটে এসিডিটি তৈরির কাজ করতে পারে। যাদের সর্দি কাশির সমস্যা লেগেই থাকে তাদের আমলকি থেকে দূরে থাকায় উচিত। কেননা এতে ঠান্ডা ভাব রয়েছে । আবার যদি আপনাদের কারো অস্ত্র পাচার হয়ে থাকে তাহলে আপনাদের কিছু মাস এ ফলটি না খাওয়াই উচিত। কেননা অস্ত্র প্রচারের পরে যদি এই ফল খান তাহলে রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
আমলকির বিভিন্ন উপকারিতা
- চুলের সমস্যায় ঃ আমলকি চুলের সমস্যার সমাধান করে। আমলকি চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে এবং চুলের পরিচর্যার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমলকি চুলের গোরা মজবুত করে। আবার আমলকি চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- চুলের খুসকি সমস্যায়ঃ আমলকি চুলের খুশকি দূর করে এবং চুল পাকা বন্ধ করে।
- কষ্টকাঠিন্য রোগের ক্ষেত্রেঃ আমলকি রস কষ্টকাঠিন্য রোগ দূর করে এবং পাইলসের সমস্যার দূর করতে পারে। তাছাড়া পেটের বদ হজম দূর করতে সহায়তা করে।
- এসিডিটির সমস্যা দূর করে ঃ আমলকির গুঁড়ো এবং এক গ্লাস দুধ বা পানির মধ্যে মিশিয়ে এবং এতে সামান্য চিনি মিশিয়ে দিনে দুবার খেতে পারেন। এতে এসিডিটির সমস্যা কমাতেসাহায্য করতে পারে।
- ত্বকের সমস্যায় ঃ ত্বকের সমস্যায় আমলকি খুব ভালো কাজ করে। আপনি প্রতিদিন সকালে আমলকির রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে পারে । এতে করে ত্বকের কালো দাগ দূর হবে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
- চোখের সমস্যায়ঃ আমলকি চোখের সমস্যা দূর করে। আমলকি রস দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এছাড়া চোখের বিভিন্ন সমস্যা যেমন চোখের প্রদাহ চোখে চুলকানি বা চোখের পানি পড়ার সমস্যা থেকে রেহাই দেয়।চোখ ভালো রাখার জন্য উপকারী ফল হলো আমলকি। এতে রয়েছে ফটো কেমিক্যাল যা চোখের সঙ্গে জড়িও ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- বিভিন্ন সমস্যায় ঃ তাছাড়া প্রতিদিন আমলকি রস খেলে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর হয় এবং দাঁত শক্ত থাকে। আমলকি তেতো ও এতে করে আমলকি মুখের রুচি ও স্বাদ বাড়াতে সাহায্য করে । আমলকি খিদে বাড়াতেও সাহায্য করে।
আমলকির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপ কমায়। তাছাড়া আমলকি বমি অনিদ্রা ব্যথা-বেদনে আমলকি অনেক উপকার করে থাকে। আমলকি রক্তশূন্যতা দূরীকরণেও বেশ ভালো কাজ করে থাকে।
আবার ব্লাড সুগার এর লেভেল নিয়ন্ত্রণ রেখে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আমলকি বয়েসের ছাপ পড়তে দেয় না। আমলকি শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে শরীরে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত হাইপার লিপিডেমিয়া বন্ধ করে। এজন্য বয়সের ছাপ পড়ে না।
আমলকি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
আমলকি খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে এ পর্যায়ে আমরা জানবো। প্রতিদিন সকালে আমলকি খেলে বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায়। আমলকি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল। আমরা পুষ্টিকর ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে থাকি। আমলকি খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে একথা অনেকেরই জানা। সকালে আমলকি খেলে অনেক অসুখ সেরে যেতে পারে।
সকালে খালি পেটে লেবুর পানি খান অনেকে। এজন্য যে লেবুর পানিতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মেদ কমায়। কিন্তু এর চেয়েও বেশি উপকার দিতে পারে আমলকি। গোটা আমলকি টুকরো করে অল্প গরম পানিতে মিশিয়ে নিন তারপরে সে পা আমলকির বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছেনি সকালে খালি পেটে খেয়ে ফেলুন। ফলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে দূষণমুক্ত করবে।
আমলকির গুড়ো খাওয়ার নিয়ম
আমলকি গুড়ো বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। শরীরকে সব সময় সুরক্ষা দেয় ন্যাচারাল আমলকির পাউডার। অসাধারণ উপকারিতা রয়েছে। আয়ুর্বেদের ভাষায় একে অমৃত ফল বলা হয়। আমলকিতে রয়েছে পেয়ারা চেয়ে তিনগুণ, কাগজি লেবুর চেয়ে ১০গুণ, কমলালেবু চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ, আপেলের চেয়ে ১২০, গুণ আমের চেয়ে 24 গুণ, এবং কলার চেয়ে ৬০ গুন ভিটামিন সি। আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ব্যবহারের নিয়ম অনেক। যেমনঃ
- আমলকি স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায়
- আমলকি মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে
- আমলকি খাওয়ায় রুচি বাড়ে
- বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খুব দ্রুত কাজ করে আমলকি
- চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে
- প্রতিদিন সকালে আমলকির জুস খাওয়া পেপটিক আলসার প্রতিরোধে কাজ করে
শুকনো আমলকি খাওয়ার নিয়ম
শুকনো আমলকি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমলকিতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। আমলকি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সহ সর্দি কাশি এবং শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে আমলকি শুকিয়ে তারপর সেটা গুড়ো করে খাওয়ার ফলে রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং শুকনো আমলকির বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। যেমনঃ
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- মুখের সমস্যা দূর করে
- মস্তিষ্ক এবং দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে
- হজম শক্তি ঠিক রাখতে সাহায্য করে
- নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
- দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাবে
রাতে আমলকি খেলে কি হয়
নিয়মিত আমলকি খেলে যে উপকার হয়
শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়। ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর রাখার জন্য কেবলমাত্র ক্রিম লোশন ও তেল ব্যবহার করলে হবে না। ভেতর থেকে ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার। হ্যাঁ বিশেষজ্ঞরা শীতকালে আমলকি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। বিভিন্ন উপকারে আসে এবং রোগ বালাই থেকে মুক্ত রাখে।
আরো পড়ুনঃ আমলকি সম্পর্কে বিস্তারিত
নিয়মিত আমলকি খাওয়ার ফলে চুলের জেলা বৃদ্ধি পায়। রুক্ষতা কমে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়্ পেটের গোলযোগ দূর হয়। এজন্য বিশেষজ্ঞরা সকালে কাঁচা আমলকি বা সেদ্ধ আমলকি খাওয়ার কথা বলে থাকেন। আমলকি চুলের গোড়া মজবুত করে চুলকে খুশকি মুক্ত রাখে।
আমলকিতে থাকা বিভিন্ন উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং এতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিপাক এর হার বৃদ্ধি করে। এটির ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা পালন করে। শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যথা-বেদনা দূর করতে সাহায্য করে আমলকি। অন্যান্য ফলমূলের চেয়ে ভিটামিন সি আমলকিতে সবচেয়ে বেশি।
দুপুরে খাওয়ার পরে আমলকি খান
বিভিন্ন রোগ সারাতে আমলকি
আমলকির ঔষধি গুণ
- আমলকি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ওপর কাজ করে।
- দীর্ঘমেয়াদি কাশি সর্দি হতে উপকার পাওয়ার জন্য আমলকির নির্যাস উপকারী।
- আমলকি দাঁত, চুল ও ত্বক ভালো রাখে।
- আমলকি বমি বন্ধ করতেকাজ করে।
- আমলকি হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
- আমলকি খাওয়ার ফলে খাওয়াতে রুচি বাড়ায়।
- মাথাব্যথা ,কষ্ট কাঠিন্য্ অম্ল, রক্তশূন্যতা, বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করে।
আমলকির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
আমলকির গবেষণায় কোন ব্যক্তি বাচক বা কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা সেভাবে উল্লেখ নেই। তবুও আমলকির ব্যবহার সম্পর্কিত কিছু প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
আমলকি যদি বেশি পরিমাণে খাওয়া হয় তাহলে মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য আমলকি অধিক পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়।
আমলকি খাওয়ার ফলে কিছু মানুষের মধ্যে যে এলার্জি প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সেগুলি হল পেটব্যথা, বমি বমি ভাল, ডায়রিয়া, মুখের চারপাশে ফুসকুড়ি, মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা। হাইপারগ্লাইমেসিক মানুষের জন্য পরামর্শ হলো বীজযুক্ত ফল ব্যবহার এড়াতে কারণ এটি তাদের স্বাস্থ্য অবস্থা খারাপ করে দিতে পারে।
নতুন চুল গজাতে আমলকি
চুলের যত্নে আমলকি ও মেথি
শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আমার এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে বা আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনারা আপনাদের প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন। এবং বন্ধুদেরকেও শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url